নিজস্ব রিপোর্ট : গত ২২মার্চ, শুক্রবার ,সিডনির লাকেম্বা মসজিদে হাজারো মানুষের সমাগম হয়েছিল। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশী মানুষ ছিল অমুসলিম। অস্ট্রেলিয়াতে এটি একটি বিরল ঘটনা এবং দিনটি ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে থাকবে। যদিও গত শুক্রবারই জুম্মার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত হয়।
শুক্রবার সিডনির লাকেম্বা মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন এর মত অনেকেই মাথায় হিজাব পরে জুম্মার নামাজের আগে থেকেই জড়ো হতে থাকে মসজিদের বাহিরে। খুদবা সরাসরি বাহিরের সাদা ওয়ালে লাইভ দেখানো হয়। বাহিরে ছিল অস্ট্রেলিয়ার সমস্ত মিডিয়ার লোকজন।
জুম্মার নামাজের পর পরই দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তারপরই পাঞ্চবোল বয়েজ হাই স্কুলের একদল ছেলে মসজিদের সামনে ভালবাসা মুক্তি দিতে পারে, ভালবাসাই বাঁচাতে পারে ‘ এই কথা বলেই নিউজিল্যান্ডের হাঁকা পরিবেশন করেন। সবাই যেন সবার বন্ধু , ছিলোনা কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ। হাজার হাজার মানুষ রাস্তার দুইধারে তাকিয়ে এই দৃশ্য দেখছিল। কারো মনে কোনো ভয় ছিল না।
স্থানীয় রাজ্যের এম পি জিহাদ ডিব ও ফেডারেল এম পি টনি বার্ক ছাড়াও স্থানীয়া চার্চের প্রধান, প্রাইমারি ও হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার লোকজন একাত্মতা প্রকাশ করেন।
মাথায় স্কার্ফ পরা সাইকোলজিস্ট রুথ নেলসন বলেন, “আমি একজন ক্যাথলিক, এই মুহূর্তে কমিউনিটির এত বড় একটা বিপদে একত্মতা করা ছাড়া আর কি করা যাবে বলো। ”
সিডনি থেকে কয়েকঘণ্টা দূরে সাউথ কোস্ট থেকে এসেছিল এক পশ্চিমা নারী কলিন কেলি। সে বলল, “আমি আমার জীবনেও মসজিদে যায়নি,অনেক দূর থেকে বাসে- ট্রেনে করে এসেছি এইখানে শুধু একটি কথা বলতে, যেখানে মানুষ ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা পায় না, অবশ্যই বলতে হবে, আমরা মানুষ হিসেবে কোথাও যেন হারিয়ে যাচ্ছি। সকল ধর্মের মানুষকে নিরাপদ রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।”
লাকেম্বা মসজিদের এমাম ইয়াহ সাফি বলেন, এত মানুষ এসেছে শুধু তাদের অন্তরের ভালোবাসায় জানাতে এই মসজিদে।
শুধু লাকেম্বা মসজিদ ছাড়াও সিডনির অন্য মসজিদগুলোতে একই ধরণের চিত্র ফুটে উঠেছে বলে জাতীয় মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।