সিডনি প্রতিনিধি :প্রেম ভরিয়া লহ শূন্য জীবনে”-এই বার্তা নিয়ে রমনার বটমূলের আদলে সিডনীর অ্যাশফিল্ড পার্কে’র সবুজ চত্বরে গত ১লা মে রোববার সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতীতি’র আয়োজনে হয়ে গেলো এক অনুপম বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো এবারো ঢাকার রমনার বটমূলের আদলে সাজানো হয়েছিল এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। অবিকল ঢাকার বর্ষবরণ পরিবেশ যেন সিডনীর অ্যাশফিল্ড পার্কে। রোববার সকাল ১০টা থেকে উন্মুক্ত পরিবেশে সত্যিকার বৈশাখীছোঁয়া পেতে এক সাজ সাজ আয়োজন ছিল অ্যাশফিল্ড পার্কে’র উন্মুক্ত প্রান্তরে।
সকালের দিকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় অনুষ্ঠান সাজাতে কিছুটা বৈরী পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে দশটার দিকে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু হলে দর্শক সমাগম বাড়তে থাকে। নৈসর্গিক ও প্রাকৃতিক স্নিগ্ধ পরিবেশে প্রতীতির এই অনবদ্য বর্ষবরণের আয়োজন ছিল বিভিন্ন পর্বে সাজানো। স্বাগতা’র ধারাবর্ণনায় শুরু হয় এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। প্রথমে ছিল তানিম হায়াত খানের বাজানো সরোদের সুরের মূর্ছনা এরপর সমবেতকণ্ঠে কিছু গান, দ্বিতীয় পর্বে কবিতা পাঠের আসর, নাচ ও রবীন্দ্র সঙ্গীত সহ অন্যান্য আরও কিছু জনপ্রিয় গান। এছাড়াও ছিল দেশীয় পিঠা-পুলি সহ বাঙ্গালী খাবারের নানা আয়োজন। শেষপর্বের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী সাজের জন্য বিশেষ পুরষ্কার। অনুষ্ঠানটির বিশেষ ফটোগ্রাফিতে ছিলেন শহিদুল আলম বাদল ও বিপুল রায়।
প্রতীতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সিরাজুস সালেকিন বলেন, উন্মুক্ত পরিবেশে বর্ষবরণের আয়োজন মূলত বাংলাদেশের স্মৃতি বুকে ধারণ করা। প্রবাসে নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচিত করা। তিনি বলেন, প্রতি বছর বৈশাখ এলেই মনে পরে বাংলাদেশের নববর্ষ পালনের প্রতিচ্ছবি। লালপাড় সাদাশাড়ি আর মাথায় ফুলগুজে মেয়েদের বৈশাখী সাজ, হরেক রকম বাঙ্গালী খাবার ও হালখাতা খুলে নতুন বছরের জন্য নতুন প্রস্তুতি নেয়া। তিনি আরও বলেন মনের ভিতর অনেক আলো জ্বালাতে হবে। সেই আলোয় মুছে যাক সব গ্লানি, নতুন বছর শুভ হোক সকলের জন্য। জয় হোক বাঙ্গালীর, জয় হোক মানবতার। প্রসঙ্গত, সিরাজুস সালেকিন একজন প্রথিতযশা রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি সুন্দর ও সফল করার জন্য তিনি সকল শিল্পী, দর্শক ও আয়োজকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য যে, গত ২২ বছর ধরে প্রতীতি আয়োজন করে আসছে এই বৈশাখ বরণ। এর প্রতিটি আয়োজন অতান্ত সুনিপুণ, শিল্প-সম্মত এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও কৃষ্টিগতদিক থেকে উচ্চমান সম্পন্ন। আগত দর্শকদের মতে, প্রতীতির প্রতিটি উপস্থাপনা নান্দনিক ও শিল্প-সম্মত। এর প্রতিটি আয়োজনে ফুটে উঠে বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অনুপম চিত্র। প্রতীতির এ আয়োজন ছিল সিডনী প্রবাসী বাঙালীদের কাছে এক প্রতীক্ষিত দিন।