আমার সাড়ে সতেরো বছরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন সহশিক্ষা মাধ্যমে। সেই সুবাদে ছেলে ক্লাসমেটদেরকে খুব একটা আলাদা ভাবে, ভিন্ন চোখে দেখার কালচারটা আমার/আমাদের রক্তে নেই, ছিলোনা। (তার অর্থ এই নয় যে সহশিক্ষায় যাঁরা পড়েননি, তাদেরকে আমি কোনো ট্যাগলাইন দিচ্ছি, আমি শুধু আমার কথাটা বললাম)। আমি / আমরা আসলে এতো ছোট বয়স থেকে সমান্তরালে বড় হয়েছি যে ওদেরকে “বন্ধু” ছাড়া অন্য কিছুই মনে হয়নি, হয়না আজ অবধি।
পরিণত বা অপরিণত বয়সে কারো সাথে কারো প্রেমের সম্পর্ক হয়নি তা বলছিনা, বলছি ইন জেনারেল আমাদের চিন্তাধারার গতিবিধি ক্যামন ছিলো বা আছে।
একটা লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, ডিসেন্সির ফাইন লাইনটা আমরা কোনোদিন ব্রেক করিনি। আজ অবধি আমাদের ব্যাচমেটদের ভার্চুয়াল গ্রূপে দুনিয়ার সকল প্রান্ত থেকে যোগ দেয়া বন্ধুদের তুমুল আড্ডা হয়, লাইভে এসে অনুরোধের আসরে গায়ক বন্ধুরা একের পর এক গান গেয়ে যায়। কমেন্টের ফুলঝুরি দেখে আমেরিকায় পি এইচ ডি রত কোনো বন্ধু হাসতে হাসতে ল্যাবের নিস্তব্ধতা ব্রেক করে… আমি চোখ ডলে অফিস যেতে যেতে ট্রেনে অট্টহাসি দিয়ে উঠি !! ধুমাধুম ছবি পোস্ট করি নিজেদের, একজন একজনকে ছোটবেলার নাম ধরে ডেকে উঠে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ি। মনে হয় সেই ক্লাস এইট নাইন বা টেনে ফিরে গেছি আবার!
এই গ্রূপে আমাদের এক বান্ধবী নিজের ফুল বডি পিকচারও দিয়েছে। জ্বী, ঠিক শুনেছেন, ইন্টেনশনালি শরীর দেখানোর জন্য ফুল পিকচার দেয়া!
জীভে কামড় দিয়ে আছেন?? শ্বাস ছাড়েন এইবার! প্র্যাকটিসিং মুসলিমা এই বান্ধবী আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢিলেঢালা পোশাকে আবৃত ছবি ই দিয়েছে, কিন্তু ওর শুকিয়ে যাওয়া মুখটা দেখে আমরা ঠিক ই বুঝতে পারছিলাম কঠোর পরিশ্রম করে নিজের মেদ ঝরিয়ে বেশ ঝরঝরে হয়েছে ও। বলতে পারেন ইন্সপিরেশনাল একটা ছবি ! তা দেখে আমরাও নড়ে চড়ে বসলাম ( এখনো বৈসাই আসি যদিও ?)।
ফোকাল পয়েন্টে আসি, ডিসেন্সির ফাইন লাইন! যেভাবেই হোক, আমার নজরে এসেছে অন্য কিছু স্কুল কলেজের অনলাইন গ্রূপের আড্ডা। এরা কিন্তু আমাদের #পরের_জেনারেশন_না । এদের গ্রূপে শেয়ারকৃত ছবি, আলোচনার অংশবিশেষ বা একজনের আরেকজনকে সম্বোধন দেখে আমার মনে হয়েছে আমরা ব্যাচ শুদ্ধ অচল কড়ি! মধ্যরাতে বাচ্চা কাচ্চার মায়েরা মিনিস্কার্ট টাইট টপ অথবা স্লিভলেস ব্লাউজের সাথে মশারি নেট শাড়ি পরা ফুল বডি পিকচার যখন কো এডুকেশন ফ্রেন্ডস গ্রূপে শেয়ার দেয়, তখন আমার না ক্যামন জানি গা গুলায়!
বাচ্চা কাচ্চার বাপগুলির বাঁধভাঙা হ্যাংলামী দেখে আমার ক্যানো জানি মনে হয়, আমরা খুব ব্লেসড! ব্যাচ হিসাবে এবং সহপাঠীদের রুচিবোধের মানদন্ডে।
ব্যক্তিগত জীবনে কে কি কাপড় পরবে বা আদৌ পর্বে কিনা, সেটা ভিন্ন কথা। তাই বলে গ্রূপে ডিসেন্সি থাকবে না?
আমরা ক্ষ্যাত ই থাকলাম, কেউ ফেইমসিকার ( খ্যাতি পিয়াসী) হইতে পারলাম না।
হমু ক্যাম্বায়?
ডিসেন্সির ফাইন লাইন আমাগো মাথার ভিত্রে পুরা মগজের মাঝ বরাবর দিয়ে গেছে !!
#প্রাউড টু বি ক্ষ্যাত !