নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কবি লিখেছেন ‘যতদূর বাংলা ভাষা, ততদূর এই বাংলাদেশ’ ।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি!
বাংলা ভাষা ও একুশ যেন একসাথে গাঁথা একটি ইতিহাস। ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবেও সুপরিচিত। বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বার শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙ্গালী রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা দিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ১৯৯৮ সালে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
কেবল বাংলাদেশে নয়, দেশের সীমানা পেড়িয়ে বিভিন্ন দেশেও উদযাপিত হয় এই দিবসটি। বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাঙ্গালীরা আত্মার টানে পালন করেন ২১শে ফেব্রুয়ারি।
সিডনি বাঙ্গালী কমিউনিটি ইনক্, আগামি ২৪ শে ফেব্রুয়ারি শনিবার, ২০১৮ বিকাল ৫:০০ টায় , গ্রেগ পারছিভাল হল(ইঙ্গেলবার্ন লাইব্রেরি সংলগ্ন), অক্সফোর্ড রোড ও কাম্বারলেন্ড রোড এর কর্নার, ইঙ্গেলবার্ন-২৫৬৫ এ মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে।
মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানসূচীতে থাকছে শিশুকিশোরদের ভাষা বিষয়ক প্রতিযোগিতা। এছাড়াও তারা পরিবেশন করবে বাংলা ভাষায় গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি ও দলগত সংগীত । এইবার শিশুকিশোরদের তিনটি সংগঠন (কিশালয় কচিকাঁচা, কিশোর সংঘ ও নৃত্যকলা ড্যান্স একাডেমী) এতে অংশগ্রহন করবে।
দ্বিতীয় পর্বে থাকছে নৃত্য পরিবেশনায় অর্পিতা সোম ও পূরবী পারমিতা বোস , গান থাকছেন সীমা আহমেদ , তপু হাবীব এবং সবশেষে থাকছে সিডনির খুবই পরিচিত জুটি আরফিনা মিতা ও আতিক হেলালের বাংলাদেশ ও বাংলা নিয়ে গানের আসর।
ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষার ইতিহাস ও দেশী সংস্কৃতি তুলে ধরতেই মুলত এই আয়োজন। সাদা/কালো সমন্বয়ের দেশীয় পোশাকে অনুষ্ঠানে আসার জন্য সিডনি বাঙ্গালী কমিউনিটি ইনক্ সবাইকে সাদরে আমন্ত্রন জানাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, সিডনি বাঙালি কমিউনিটি ইন্ক্ বাংলাদেশের শহীদ মিনারের আদলে ক্যাম্পবেলটাউন এলাকায় একটি শহীদ মিনার তৈরী করার জন্য সিটি নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকার থেকে ৩৫৬১৬ ডলারের সরকারী অনুদান পান এবং বর্তমানে ক্যাম্পেলটাউন সিটি কাউন্সিলে শহীদ মিনার স্থাপনের জায়গা অনুমোদনের সিদ্বান্ত প্রক্রিয়াধীন। জায়গা অনুমোদন পেলেই শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু করা যাবে।