সিডনিতে ক্যাডেট পরিবারের পিঠা উৎসব

সিডনিতে ক্যাডেট পরিবারের পিঠা উৎসব

ইমতিয়াজ রিশা :আমার নানাবাড়ির বড় আম গাছ আর  আতাফল গাছের মাঝখানে একটা পাটশোলার বেড়া দেয়া  জায়গা ছিল।  সেখানে মাটির দুইটা চুলা ছিল।  সেই মাটির চুলায় শীতেরদিনে নানা রকমের পিঠা রান্না হতো।  আহারে ! কতদিন মাঘের শীতের কুয়াশা সকালে ভাপ ওঠা গরম গরম ভাপা পিঠা খেতে খেতে ওম ধরা রোদে বসে রোদ  তাপlই না। শৈশবের সেই পিঠার স্মৃতি আবার ফিরে এলো ক্যাডেট ফ্যামিলিস অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত পিঠা উৎসবে। গত ২৮শে  জুলাই চেস্টারহিল কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এই পিঠা উৎসবের আয়োজনকারীরা সবাই সিডনি প্রবাসী ক্যাডেট পরিবারের সদস্য ( বেশ কয়েকজন ক্যাডেট ভাবি এবং গার্ল ক্যাডেট) l মূল আয়োজক তাম্মি পারভেজ , এশা সরকার এবং দিবা আলম। পুরো আয়োজনটিতে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করেছে কাঞ্চিভাবি  , শারমিনভাবি , নীহারিকাভাবি  , টুঙ্গিভাবি , স্নিগ্ধাভাবি  , সাইকিভাবি, কানিজভাবি  এবং আরো বেশ কয়েকজন ক্যাডেট ভাবি।গার্লস ক্যাডেটদের মধ্যে সক্রিয়ভাবে  অংশগ্রহণ এবং সার্বিক সহায়তা করেছে  সেলিমা আপা , জুঁই এবং আরো কয়েকজন।

সাউন্ড সিস্টেমে  তখন বাজছে শাহ আব্দুল করিমের গান ‘ গান গাই আমার মনরে বোঝাই , মন থাকে পাগলপারা – আর কিছু চাইনা মনে গান ছাড়া ‘ l দারুন স্বাদের  পিঠার টুকরো মুখে পুড়ে দিয়ে কেউ কেউ তখন গাইছে ‘ আর কিছু চাইনা আমি পিঠা ছাড়া – পিঠা ছাড়া ‘ l মঞ্চের সামনে সাজানো টেবিলে থরে থরে সাজানো ছিল নানা রকমের পিঠা।  পাকন পিঠা, পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা, পাটি সাপ্টা, নারিকেলের নাড়ু এবং আরো অন্যান্য সুস্বাদু পিঠা।  এই রঙিন পিঠা উৎসবের সবচেয়ে চোখে পড়ার বিষয় ছিল হলের্ দেয়াল পটভূমিতে আঁকা চমৎকার  লাল -নীল-হলুদ-সবুজ আলপনা।  এ ছাড়া একটি কৃত্রিম বৃক্ষে শোভা পাচ্ছিলো অংশগ্রহণকারী সকল দম্পতিদের যুগল ছবি।  আরো ছিল ফুলে ফুলে সাজানো সেলফি কর্নার এবং ফটো বৃত্ত।  আল্পনা এবং সাজসজ্জার শৈল্পিক কাজটি সম্পন্ন করেছে ক্যাডেট মাসুদ পারভেজ।  আঁকাআঁকির কাজে মাসুদ পারভেজের জুড়ি মেলা ভার।  দুপুরের আহারের ব্যবস্থা ছিল চমৎকার।  আহারের পরে ছিল বিনোদনমূলক খেলার ব্যবস্থা। নৈর্বচনিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত দম্পতিরা খেলায় অংশগ্রহন করেন।  খেলাটিতে স্ত্রী স্বামীর চোখ  বেঁধে দেন এবং স্বামী চোখ বাধা অবস্থায়  দীপিকা পাডুকোনের ছবিতে টিপ্ পড়াবেন।  সঠিক জায়গায় টিপ্ পড়ালেই পুরস্কার।  দীপিকার কপালে টিপ্ পরিয়ে পুরস্কার জিতে নেন ড : আয়াজ  ভাই  (এমসিসি) এবং  তারিক ভাই (  গার্ল ক্যাডেট সেলিমা আপার স্বামী) l এ ছাড়া ছোটদের জন্য ছিল বিভিন্ন রকমের উপহার সামগ্রী।

সবশেষে ছিল পরিচিতি পর্ব।  এ পর্বে ক্যাডেট দম্পতিরা মঞ্চে এসে নিজেদের পরিচয় দিয়ে পিঠা উৎসব নিয়ে নিজেদের অনুভূতির কথা বলেন। ড : জেসি চৌধুরী (ড: আয়াজ ভাইয়ের স্ত্রী ) হাস্যরসের সাথে উল্লেখ করেন আয়াজ ভাইয়ের অসংখ্য ভাই – সকল ক্যাডেটই তার ভাই। এ ছাড়া সংক্ষিপ্ত পরিচয় -বক্তব্যে আয়োজকদের উৎসাহজ্ঞাপনকারী প্রশংসা করেন বাদলভাই – লিমাভাবি , বরকত ভাই -রুবিনা ভাবি, ফিরোজ ভাই – নীহারিকা ভাবি, সাইফুলভাই – টুঙ্গি ভাবি ,মেসবাহ ভাই -রানু ভাবি, সেলিম আপা -তারিক ভাই, এহসান -কানিজ ভাবি, নাজ – সাইকি ভাবি, আরিফ-রুমাভাবি, আসাদ -বিনাভাবি, আজিজ -কাঞ্চিভাবি , বখতিয়ার -শারমিনভাবি , সহেল – স্নিগ্ধাভাবি, হামিম-জুঁই এবং অন্যান্য।   অংশগ্রহণকারী সকলেই রঙিন পিঠা উৎসবটির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আয়োজকদের  ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।  আয়োজকদের পক্ষ থেকে আগামীতে এধরণের বাঙালি সংস্কৃতিবহনকারী অন্যান্য উৎসব আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করো হয় l