অনলাইন ডেস্কঃ লোকচক্ষুর আড়ালে তিনি চলে গিয়েছিলেন আগেই। সে কথা আশির দশকের। এর আগে রুপালি পর্দা জুড়ে শুধু এক জোড়া নামই ছিল—উত্তম-সুচিত্রা। উত্তম চলে গেলেন আগেই, আর সুচিত্রা? আজকের দিনে, ২০১৪ সালে। মৃত্যু দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য মহানায়িকাকে।
১৯৫২ সালে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন। প্রথম ছবি ‘শেষ কোথায়’। তবে ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি করে সাড়া ফেলে দেন। এরপর একের পর এক ছবি উপহার দেন এই তারকা জুটি। ভক্ত হৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি মহানায়িকা রূপে। বাংলা ভাষার পাশাপাশি হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি। তাঁর অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি ‘দেবদাস’। ১৯৭৮ সালে ‘প্রণয় পাশা’ ছবিটি করার পর লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান, আর জনসমক্ষে আসেননি।
১৯৬৩ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ পান। এ ছাড়া পান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলাবিভূষণ সম্মাননা। ২০০৫ সালে সুচিত্রা সেনকে ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব করা হলে সুচিত্রা সেন দিল্লিতে গিয়ে ওই সম্মান গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সুচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল, বাংলাদেশের পাবনায়। শৈশব কেটেছে সেখানেই। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বাবা-মায়ের পঞ্চম সন্তান ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দীবানাথ সেনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁদের ঘরে একমাত্র সন্তান মুনমুন সেন। দুই নাতনি রাইমা সেন ও রিয়া সেন। তাঁর দাদা পঞ্চকবির একজন রজনী কান্ত সেন। তিনি ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ভক্ত।
সুচিত্রা সেনের অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে, অগ্নি পরীক্ষা, গৃহ প্রবেশ, ঢুলি, মরণের পরে, দেবদাস, শাপমোচন, মেজ বউ, হারানো সুর, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, ইন্দ্রানী, সপ্তপদী, সাত পাকে বাঁধা, উত্তর ফাল্গুনী, মমতা, গৃহদাহ, কমললতা, আলো আমার আলো, দত্তা, প্রণয় পাশা ইত্যাদি।