এক্কা-দোক্কা

এক্কা-দোক্কা

সকাল বেলার রোদ্দুর যেই মাটিতে পা ফেলছে একটা চড়াই অমনি দেখি এক্কা-দোক্কা খেলছে……কবির সুমন এর গান শুনছিলাম, এই গানটি কেন যেন আমার সেই নিষ্পাপ কৈশোর কে ছুঁয়ে গেল আর বুক থেকে কয়েক ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পড়লো। তবে কি কেবল ঘাস, ফড়িং, রোদ্দুর, চড়াই আর ছেলেবেলা আমাকে পিছু টেনে যায়?হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো একবার ছুঁতে ইচ্ছে করে। কৈশোর পাওয়া হয়নি, সবকিছুই কেমন যেন এলো মেলো বিচ্ছিন্ন, তাই বুঝি কোনো এক বিকেলের নির্জন প্রহরে আবেগী মন খুঁজে বেড়ায় তার শেকড় আর ফিরে ফিরে চায়।
মনে পরে যায় ছোট্ট বেলার মিষ্টি সব ভালোবাসা আর ভালোলাগা, তা হয়তো প্রিয় বান্ধবীর দেওয়া নূপূর কিংবা অনেক পছন্দের গান গুলো যত্ন করে রেকর্ড করা ক্যাসেটে। মিষ্টি রোদে বারান্দায় বসে রোদ খাওয়া, কিংবা একটু চটপটি স্কুল এর গেট এর সামনে। আহা কতোই না আনন্দ ছিল তাতে, নির্ভেজাল-নিষ্পাপ আনন্দ গুলো আর কখনো ছুঁয়ে যাবেনা।
আজকাল আনন্দ ফেরি করে বেড়াতে হয়, তাকে আবার চড়া দামেও কিনতে হয়, কখনো কখনো লোকজনের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হতে হয়। অথচ কি অদ্ভুত সুন্দর ছিল সেই দিনগুলি যখন ঈদ এর জামা বানাতে যেতাম খালাতো বোনের সঙ্গে, ঈদ এর দিন দল বেঁধে এর ওর বাড়িতে বেড়ানো আর সেমাই খাওয়াতেই কত আনন্দ! ফিরে ফিরে চাই সেই দিনগুলোর দিকে, অনেকটা হারিয়েই গিয়েছিলো স্মৃতির আংগিনা থেকে। আজ কবির সুমন এর গান শুনতে শুনতে আবেগী মন ফিরে তাকালো একটিবার।
এখানে রোজা-ঈদ সবকিছুই পালন হয় কিন্তু তা যেন অন্য গ্রহের অন্য কোনো প্রজাতির অন্য নিয়মের খাঁচায় বাঁধা কোনো এক নতুন আবিষ্কার। রোবট এর মতো আমরা তা সাদরে বয়ে নিয়ে চলি। আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে!! এতগুলো বছর এই মাটিতে থাকবার পরেও কোনো এত পিছু টান? তাকি এই শুকনো মাটির দোষ নাকি আমরাই এই মাটিকে লালন পালন করে আমাদের কৈশোরের সেই নির্মল ভালোবাসার আংগিনা করে তুলতে পারিনি?
খুব জানতে ইচ্ছা করে কোন পরশ কাঠির ছোঁয়াতে এই মাটি আমার হয়ে উঠবে আর মন ভরে আমি আমার কৈশোর উপভোগ করবো একটিবার।
০১/০৬/২০১৯
মলি সিদ্দিকা