বাঙালির অনুষ্ঠানে বাংলা কথা নাই ।।

বাঙালির অনুষ্ঠানে বাংলা কথা নাই ।।

সিডনিতে বাংলাদেশের ও পশ্চিম বাংলার প্রচুর বাঙালী বাস করে যাদের বাংলা ভাষায় কথা বলার বা বোঝার কোন সমস্যা আছে বলে আমি মনে করি না। বি:দ্র: ৩য় ও ৪র্থ প্রজন্মের ছেলে মেয়ে ব্যাতিত। যতটুকু জানি এই প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা বাংলায় লিখতে না পারলে,কিছু কথা বলতে ও বুঝতে পারে – যদি তাদের পরিবার থেকে অভ্যাস করানো হয়।

আমি বাংলাদেশ থেকে সিডনি এসেছি প্রায় চল্লিশ দিন হলো। এর পূর্বে আরো দুবার এসেছি। এবার এরই মধ্যে বাঙ্গালীদের আয়োজনে গান, নাচ সহ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সকাল অনুষ্ঠানে বাঙ্গালী শ্রোতা দর্শক ছাড়া শিখ,মারাঠি,শ্রীলঙ্কান, বার্মা,পাকিস্তান বা সাদা চামড়া বলতে যাদের বোঝায় এমন কোন শ্রোতা দর্শক থাকে বলে মনে হয় না। যদিও আসে অতিথি হিসেবে এসে উপস্থিতি দিয়ে চলে যান। যে কয়েকটি অনুষ্ঠান দেখলাম প্রতীতি ব্যাতিত অন্যান্য অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা ইংরেজি ভাষায় করা হয় যা উপস্থিত বয়:জেষ্ঠ শ্রোতা দর্শক বর্গ সবাই সাবলীল ভাবে বুঝতে পারে না। কারণ যারা ইংরেজিতে উপস্থাপন করে তাদের উচ্চারণ বয়স্করা সহজে অনুসরণ করতে পারে না। এমন কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর উচ্চারণ রবেন্দ্র নাট ঠ্যাগুর উচ্চারণ করে। এগুলো কাদের শুনিয়ে উপস্থাপক তৃপ্তি পায়। নাকি তারা নিজেরাই তৃপ্তি পাওয়ার জন্য ইংরেজিতে উপস্থাপন করে। সেই যদি হয় তবে গানের ভাষা বাংলায় না বলে ইংরেজিতে বলাতে পারে। যেমন – “তুমি কোন কাননের ফুল গো ” না বলে ইংরেজিতে বল – what kind of flower are you
তুমি রবে নিরবে হৃদয়ে মম- YOU are silent in my heart
আমারও পরানো যাহা চাই – I can wear whatever I want
ইত্যাদি।

আমি বেশ কয়েক জায়গায় আমার অভিমত প্রকাশ করেছি এবং আমার সাথে অনেকেই এক মত হয়েছেন। কি আশ্চর্য বাংলা অনুষ্ঠানে বাংলায় কোন কথা নাই। ভাবতেই খুব কষ্ট লাগে। কলকাতা কেন্দ্রিক বাংলা অনুষ্ঠানে ইংরেজিতে উপস্থাপনা করার প্রবনতা খুব বেশী। জানি না এই ভাবে বাংলা অনুষ্ঠান কতটা সমাদৃত হয় বাঙালি শ্রোতা দর্শকদের অন্তরে।
এগুলো দেখে সেই গানের কথা মনে পড়ে যায় – এক তারা বাজায়েও না,দো তারা বাজায়েও না।
গিটার আর কঙ্গো বাজাও রে,
এক তারা বাজাইলে মনে পইরা যায়,
একদিন বাংগালী ছিলাম রে।
অবশেষে এই বিষয়টার প্রতি প্রবাসী বাঙালী সাংস্কৃতিক ব্যক্তি বর্গ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সামনে অনেক অনুষ্ঠান আছে , আছে ২১ শে ফেব্রুয়ারী , বাংলা নববর্ষ।
প্রসাদ ফণী (রতন)
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, নওগাঁ, বাংলাদেশ।
(বর্তমানে সিডনি প্রবাসী)