অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এন আর বি’র আন্তর্জাতিক সেমিনার

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে এন আর বি’র আন্তর্জাতিক সেমিনার

গত ৩০ আগস্ট রোববার সন্ধ্যা ৬টায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে রেডরোজ ফাংশন হলে সেন্টার ফর এনআরবির উদ্যোগে আয়োজন করা হয় একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিষয়ক সেমিনার। নিউইয়র্ক, লন্ডন এবং মালেশিয়ায় ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স সিরিজ ২০১৫ পর্ব সফলভাবে সম্পাদনের পর অস্ট্রেলিয়ায় এবারই প্রথম এ জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ইনভেস্টমেন্ট রেমিট্যান্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ব্র্যান্ডিং অব বাংলাদেশ ২০১৫’ শীর্ষক এই সেমিনারের মুল উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত মাসিক মুক্তমঞ্চের পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান এবং আর কিছু স্থানীয় আয়োজক। এই আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিষয়ক সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বেসরকারি ব্যাংকসমূহের অংশীদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সহ স্থানীয় গণ্যমান্য বক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত ও পবিত্র কোরআন তেলওয়াত এর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শুরুতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয়। তারপর কমনওয়েলথ প্রধান ইংল্যান্ডের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদেশ মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, আমেরিকার স্টেট সেক্রেটারী নিশা দেশাই বিশ্বাস, আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল ইসলামের বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

সেমিনারে সেন্টার ফর এনআরবির চেয়ারম্যান এম এস শাকিল চৌধুরী মূল বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসীকর্মীর অবদানের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিনিয়োগ, রেমিট্যান্স ও অর্থনৈতিক উন্নতি দেশের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ অগ্রগতির উপায়। তিনি এনআরবি সদস্য দের জন্য একটি ডেটাবেজ তৈরির গুরত্তের কথা উল্লেখ করে বলেন ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রবাসীরা বিনিয়োগে এক নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র সৃষ্ঠি হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের ৩০তম বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে দেখার আশাবাদ বাক্ত করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বাংলাদেশের উন্নয়নের যাবতীয় তথ্য সম্বলিত একটি ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শনের মাধ্যমে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।

সেমিনারে বক্তারা আরও জানান বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিট্যান্স একটি প্রধান খাত। বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধানত রেমিট্যান্স পায় সৌদিআরব, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য থেকে। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের হার মাত্র ০.৪% শতাংশ। যদি সঠিকভাবে ডাটাবেজ তৈরি করতে পারি ও অগ্রগতির পথে বিদ্যমান বাধাগুলো দূর করা সম্ভব হয় তবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেস্থায় এই বাধাগুলো দূর করা সম্ভব। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মাঝারি আয়ের দেশে পরিণত করার যে উদ্যোগ নিয়েছি তা অর্জন করা খুব একটা কঠিন হবেনা।

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে বলে উপস্থিত সবাইকে অবহিত করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অস্ট্রেলিয়া ফেডারেল পারলামেন্ট এমপি, সাবেক ইমিগ্রেশন মিনিস্টার ও বর্তমান শ্যাডো ফাইন্যান্স মিনিস্টার টনি বার্ক, ডাইভারসিটি ক্যানটারবারী সিটি কাউন্সিলের মেয়র রোবার্ট ব্রায়ান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ও অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ওবায়েদুর রহমান।

এছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গামা আবদুল কাদির, ডঃ আবদুর রাজ্জাক, নেহাল নেয়ামুল বারী, অজয় দাশ গুপ্ত, শেখ শামীম সহ বিভিন্ন সংবাদ ও গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিকগণ। সম্পাদক ও সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন বাংলা সিডনি’র সম্পাদক আনিসুর রহমান, দেশবিদেশ পত্রিকার সম্পাদক বদরুল আলম, বিদেশবাংলা ২৪ ডটকম ও এবিসি বাংলা ডটনেট এর সম্পাদক মোহাম্মেদ আবদুল মতিন, নবধারা নিউজ ডট নেটের সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ খোকন, সুপ্রভাত সিডনির চীফ রিপোর্টার ফজলে রাব্বি, বেতার বাংলার আজাদ হারুনুর রশিদ, সিডনিবাসী বাংলার সম্পাদক আবদুল মতিন, প্রথম আলো প্রতিবেদক হ্যাপি রহমান, যমুনা টিভি’র অস্ট্রেলিয়া প্রতিনিধি হাসান তারিক প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ প্রস্তাব ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর এনআরবি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সদস্য ও মাসিক মুক্তমঞ্চের প্রধান সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান। সেমিনার শেষে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।

(কাগজ প্রতিনিধি :কাজী সুলতানা শিমি)