আনন্দে মেতে ওঠা , উৎসব পালন করা বাঙালীদের সহজাত প্রবৃত্তি। আর তা যদি হয় বিজয় দিবসের আনন্দ তবে তো কথাই নেই। বিজয় দিবস আজ আর বাংলাদেশের গন্ডিতে সীমাবদ্দ্ব নেই। পৃথিবীর সর্বত্র যেখানে বাংলাদেশীদের উপস্থিতি, সেখানেই পালিত হচ্ছে বিজয় দিবস।
প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিস্থ ইঙ্গেলবার্ন কমিউনিটি হলে গত ১৭ ডিসেম্বর (শনিবার) ‘এসো মেতে উঠি বিজয়ের আনন্দে’ স্লোগান নিয়ে ‘সিডনি-বেঙ্গালিজ কমিউনিটি’র (ইনক) আয়োজন করেছে বিজয়ের ৪৬ বছর উদযাপন ।
আয়োজকদের আহবানে সাড়া দিয়ে প্রথিতযশ দুইজন সেরা আবৃত্তিকার আহকাম উল্লাহ এবং মাহিদুল ইসলাম মাহি আসেন সিডনির বাঙালীদের বিজয় উৎসবে যোগ দিতে।
বিজয় উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কবিতা আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব শিল্পী আহকাম উল্লাহ। তিনি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে একসাথে এত অস্ট্রেলিয়ান বাঙালী শিশু কিশোরদের উপস্থিতি দেখে তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং লাল সবুজের সমন্বয়ে সেজে আশা সবাইকে বিজয়ের শুভেচ্ছা দিয়ে বলেন “বাংলাদেশ , মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ গড়ার কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানএকসাথে গাঁথা। তিনি মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
তারপর রুমানা সিদ্দিকির পরিচালনায় ‘সাটারডে কমিউনিটি স্কুল অব ল্যাঙ্গুয়েজ (বাংলা)’র কিশোর-কিশোরীরা বীরশ্রেষ্ঠদের গৌরবময় জীবনগাথা নিয়ে আলোচনা করে এবং দেশের গান পরিবেশন করে।
রোখসানা রহমানের তত্ত্বাবধায়নে কিশলয় কচিকাঁচা সমবেত সঙ্গীত, ছড়া, নাচ ও গানসহ বিজয় দিবসভিত্তিক বিভিন্ন পরিবেশনা উপস্থাপন করে। কিশলয় কচিকাঁচা বরাবরই সিডনির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে শিশু-কিশোরদের নিয়ে দেশীয় গামছা, গেঞ্জির সমন্বয়ে নানা রঙের সাজে সেজে বিজয়ের উৎসবে এক চমৎকার পরিবেশনা করে।
সাজ্জাদ আনাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কাম্পেলটাউন বাংলা স্কুলের ছোট বন্ধুরা ছড়া, গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। লাল- সবুজের রং দিয়ে সেজে এসেছিল এই শিশু কিশোরদের দলটি। দেশের গান, নৃত্য , আবৃত্তি ও গল্প বলা নিয়ে এই পর্বটি ছিল উপভোগ্য।
এই পর্বের শেষ পর্যায়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে বাংলাদেশের বিজয় উৎসবের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দেশের জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী আহকাম উল্লাহ ও এডেলাইড থেকে আসা শিল্পী দেবাশীষ বিশ্বাস রুপন কবিতা আবৃত্তি করে এবং পরবর্তীতে মাহিদুল ইসলাম মাহি এবং আহকাম উল্লাহ, একক এবং যৌথ পরিবেশনায় উপস্থিত শ্রোতা-দর্শকদের মুগ্ধ করেন। বিদেশের মাটিতে এই প্রথম তাদের যৌথ কবিতা আবৃত্তি যা ছিল সত্যি চমৎকার।
এছাড়াও মাহিদুল ইসলাম মাহি সিডনি প্রবাসী গায়ক এহসান আহমেদের সঙ্গে কবিতা ও গানের সমন্বয়ে ‘আমি বাংলায় গান গাই ” পরিবেশন করেন । এক বাক্যে এটি একটি চমৎকার পরিবেশনা।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সেলিমা বেগম এবং সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন সিডনি বাঙালি কমিউনিটি।