“একুশে’র চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন”

“একুশে’র চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন”

বাস্তবায়নের রূপরেখা-১ (সাংগঠনিক ভিত্তি)  

 নির্মল পাল : উনেস্কো পরিচালিত গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী প্রতি ১৫ দিনে এই আধুনিক আভিজাত্যপূর্ণ সুন্দর পৃথিবী থেকে একটি করে ভাষা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই ধারার পরিণতি হিসেবে বিংশ শতাব্দীর শেষে বর্তমানে ব্যবহৃত ভাষা সমূহের অর্ধেক সংখ্যক ভাষার অস্তিত্ব বিলোপ হওয়া অনিবার্য!! ফলশ্রুতিতে মানবসভ্যতা এবং শিক্ষার সূচনা থেকে ক্রমবিস্তার ও বিবর্তনের ধারার অস্তিত্ব সংরক্ষণ প্রচণ্ডভাবে হুমকির সন্মুখীন! বিষয়টি ইউনেস্কোর গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত। বিশ্বব্যাপী ভাষা অবক্ষয়ের দ্রুত এই ধারাকে ইউনেস্কো মানবসভ্যতা এবং সংস্কৃতি সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভয়াবহ পরিনতি হিসেবে চিহ্নিত করেছে! বিশ্বায়নের উন্মুক্তধারা এবং প্রযুক্তির আকাশচুম্বী উত্থানের পাশাপাশি মানব সভ্যতা, শিক্ষা এবং সমাজ বিবর্তনের চলমানধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষাসমূহ সংরক্ষণ প্রয়োজনীয় বলে আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। প্রতিরোধক কৌশল হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষাসমূহকে অবক্ষয়ের ভয়াবহতা থেকে রক্ষায় ইউএনভুক্ত সকল সদস্য রাষ্ট্রের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই মাতৃভাষাসমূহ সুরক্ষা সম্ভব। এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সমন্বিত জুতসই কৌশল নির্ণয়ের পরিকল্পনা প্রণয়ন ইউনেস্কোর নীতিনির্ধারণী শাখায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

কাকতালীয় ভাবে একই সময়ে অভিবাসী জীবন এবং সমাজব্যবস্থায় নিজ নিজ মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয় হিসেবে উপলব্দি থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে ইউনাইটেড ন্যাশনশ(ইউএন)এর তৎকালীন(১৯৯৮) মহাসচিব জনাব কফি আন্নানের বরাবরে কানাডা অভিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত রফিকুল ইসলাম সরাসরি লিখিত অনুরোধ জানান। তাঁর অনুরোধপত্রে বিশ্বব্যাপী অভিবাসন এবং বিশ্বায়নের সুযোগে বহু ভাষা/সংস্কৃতি ভিত্তিক সমাজের ব্যাপক সম্প্রসারণের কারনে বছরের নির্দিষ্ট একটি দিনকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের গুরুত্বের কথা ব্যাখা করেন। অধিকিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে বাংলা ভাষা আন্দোলনের ফসল হিসেবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের দৃষ্টান্ত উপস্থাপনা করে একুশে ফেব্রুয়ারিই এমন একটি দিবসের জন্য সর্বোত্তম দিবস হিসেবে উল্লেখপূর্বক তাঁর প্রস্তাব গ্রহণের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানান।  ইউএন বরাবরে তাঁর লিখিত প্রস্তাব, এবং ইউনেস্কোর সাথে তাঁর বিরামহীন ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, এবং তাঁর প্রস্তাবের পক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের সময়োপযোগী বলিষ্ঠ কূটনৈতিক কার্যক্রম গ্রহন বাংলাভাষা আন্দোলনের মহান “একুশে ফেব্রুয়ারি” আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিরল মর্যাদা অর্জন করে। ‘বাংলা’ ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক বিরল দৃষ্টান্ত “একুশে ফেব্রুয়ারি” তাবৎ মানব সভ্যতার ভিত্তি সকল ভাষা সংরক্ষণের অনুপ্রেরণার মুখ্য মর্যাদায় উত্তীর্ণ হয়। ফলে বিশ্বায়নের পাশাপাশি বিশ্ব সমাজ, সভ্যতা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে পৃথিবীর সকল ভাষা রক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ সর্বজন বিদিত প্রয়োজনীয়তা পরিপূরণে ‘একুশের চেতনা’ সকল ভাষাভাষীর কাছেই গ্রহণযোগ্যতা অর্জন বিশ্বব্যাপী পরিপূরক কৌশল হিসেবে ইউনেস্কো কর্তৃক গৃহীত হয়। ইউনেস্কোর নেতৃত্বে সকল ইউএন সদস্য রাষ্ট্রকর্তৃক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই কৌশল বাস্তবায়নের কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণকরা সম্ভব হলে সকল ভাষাভাষী নিজ নিজ ভাষা চর্চা এবং সুরক্ষায় ব্যাক্তিগত আগ্রহ, সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা পাবে, তথা পৃথিবীর সর্বত্র সকল ভাষাভাষীর কাছেই নিজ নিজ মাতৃভাষা রক্ষায় মহান ‘একুশের চেতনা’র প্রামান্য বার্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হবে।

একুশে ফেব্রুয়ারিকেই ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে গ্রহণের সুবাদে, এবং বিশ্বের তাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষাসমূহ সুরক্ষার প্রয়োজনে বিশ্বব্যাপী ‘একুশের চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন’ই সবচাইতে উপযোগ্য কৌশলী পদক্ষেপঃ এই সুদৃঢ় বিশ্বাসে ইউনেস্কোর সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বপ্রণোদিতভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, “মাদার ল্যাংগুয়েজেস কন্সারভেশন(এমএলসি)মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশন্যাল ইনক”।  অভিবাসী প্রয়াত রফিকুল ইসলামের ব্যাক্তিপর্যায়ের উপলব্দি থেকে বৈশ্বিক কল্যাণকর চিন্তা, এবং ইউএন বরাবরে প্রস্তাবনা, তাঁর প্রস্তাবনার পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের কার্যকরী সফলতম কূটনৈতিক কৌশল অবলম্বন এবং ইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদ কর্তৃক একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার সর্বসন্মত সিধান্ত, তদোপরি ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলাদেশে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সিটিউট’ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশন্যাল ইনক প্রতিষ্ঠার মুখ্য অনুপ্রেরণা। যার দীর্ঘসুরী-সুদূরপ্রসারী তথা বিশ্ববিস্তৃত লক্ষ্যঃ বিশ্বব্যাপী সকল ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষা সমূহ সুরক্ষার প্রয়োজনে একুশের চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। ‘বাংলা’ ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটের সাথে পৃথিবীর অন্যান্য ভাষাসমূহ অবক্ষয়ের বাস্তব কারন সমূহের ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট এবং ভেদাভেদের সমন্বয়, বাংলা ভাষা আন্দোলনের ক্রমোত্থানে ঘটক-অনুঘটক হিসেবে প্রাকৃতিক, ব্যাক্তি, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ উপাদান সমূহের সাথে বিশ্বব্যাপী দ্রুত অবক্ষয়মুখী ভাষাসমূহ অবক্ষয়ের কারনগুলির সাধারণ সংশ্লিষ্টতা এবং যোগসূত্রের ভিত্তির উপর গবেষণা ও কারন নিরূপণ, এবং বাংলাভাষা আন্দোলনের ফসল একমাত্র ভাষা ভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মত  অনন্য জাতীয় অর্জনকে অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষাসমূহের তৃণমূল পর্যায়ে ভাষাভাষীর কাছে উৎসাহব্যাঞ্জকভাবে তুলে ধরার কার্যকরী ও গ্রহণযোগ্য কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে ইউনেস্কো যাতে বিশ্বব্যাপী যেকোন ভাষা সুরক্ষায় দ্রুততম গণজাগরণ সৃষ্টি করতে পারে, সেই রূপরেখা প্রণয়নের জন্যই এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশন্যাল ইনক এর গোড়াপত্তন। এককথায় বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষা অবক্ষয়ের ভয়াবহ ধারার নীরব-নিথর আর্তনাদসমূহ প্রতিকারে একুশে ফেব্রুয়ারি্’র আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অর্জিত আন্তর্জাতিক সম্মানীয় অবস্থানকে প্রত্যেকটি ভাষার ভাষাভাষীর কাছে অর্থবহভাবে গ্রহণযোগ্য করে সহজ সাধারনভাবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টাই এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশন্যাল ইনক এর সাংগঠনিক ভিত্তি।

যে ভাষাই একজন মানুষ কথা বলুক না কেন, ভাষা হিসেবে সে তার মাতৃভাষাকে সবচাইতে বেশী ভালবাসে, মাতৃভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে, মনের আবেগ, সুখ-দুঃখ-কষ্ট, মায়া-মমতা-আনন্দ-উল্লাস প্রকাশে মানসিকভাবে তৃপ্ত হয়। এই প্রাকৃতিক বাস্তবতার আলোকে প্রতিধ্বনিত মহান একুশের চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের মুখ্য লক্ষ্যঃ ভয়াবহভভাবে অবক্ষয়মান ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষাসমূহ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ভাষাভাষীর সচেতনা জাগিয়ে তোলার মাধ্যমে উৎসাহিত করে নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চা ও সংরক্ষণে আগ্রহী করে তোলা। যার আলোকে প্রণীত হয় সকল ভাষাভাষীর জন্য উপযোগ্য করে, “কন্সারভ ইউর মাদার ল্যাংগুয়েজ” বৈশ্বিক বার্তা; যার পরিকল্পিত প্রাত্যহিক বহুল প্রচারণা বিশ্বব্যাপী সকল ভাষাভাষীকে নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চা এবং সংরক্ষণে নিয়মিতভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে অনুপ্রেরণা যোগাবে। পৃথিবীর সকল প্রতিষ্ঠান এবং প্রচার মাধ্যমে এই বার্তার ব্যাপক সম্প্রচারের ব্যাবস্থা কর্মব্যাস্ত সকল ভাষাভাষীর মানসপটে মাতৃভাষা অবক্ষয়ের ভয়াবহ চিত্র বিশেষভাবে চিত্রিত করার পাশাপাশি নিজনিজ ভাষা সংরক্ষণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবে। বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হবে মাতৃভাষা চর্চা ও সংরক্ষণে সচেতনতা তথা গণজাগরণ।

মাতৃভাষা সংরক্ষণের সাধারণ প্রক্রিয়ায় বার্ষিক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনকে সকল ভাষাভাষীর অংশগ্রহণে উৎসবমুখর করে তোলার প্রয়াসে এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশন্যাল ইনক সাংগঠনিক ভিত্তি হিসেবে সারাবছরব্যাপী কার্যক্রমের রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। যার মধ্যে সামগ্রিকভাবে রয়েছে, ১) মাতৃভাষা সংরক্ষণে মনুমেন্টাল আবেদন, ২) মাতৃভাষা চর্চা/সংরক্ষনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি, ৩) সকল ইউএন সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক মাতৃভাষা সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট সাধারণ এবং সমন্বিত নীতিমালা গ্রহন

বিশ্বব্যাপী ‘মাতৃভাষা সংরক্ষণে মনুমেন্টাল আবেদন’ এর দার্শনিক ভিত্তি বাংলা ভাষা আন্দোলনের শ্রেষ্ঠতম বলি মহান একুশে ফেব্রুয়ারি’র রক্তাত্ব স্মৃতিকে সকলের মানসপটে জিইয়ে রাখার প্রয়াসে নির্মিত ‘শহীদ মিনার’ প্রতিষ্ঠার দার্শনিক ভিত্তিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে’র প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিস্তৃত তথা সকল ভাষাসংরক্ষণের বৈশ্বিক মনুমেন্টাল দর্শন হিসেবে প্রণীত। বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষা আন্দোলনের শ্রেষ্ঠ ত্যাগের  স্মৃতির আলোকে নির্মিত ‘শহীদ মিনার’ যেভাবে স্থানীয় প্রশাসনিক কেন্দ্র থেকে শুরু করে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রতিমুহূর্তে প্রতিটি সাধারণ মানুষের কাছে মাতৃভাষা রক্ষার আকুতি ছড়িয়ে  দিয়ে স্বাধিকার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালি জাতিকে উজ্জ্বিবিত করে মাতৃভাষা ভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছে, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর প্রতিটি প্রধান প্রধান শহরে “কন্সারভ ইউর মাদার ল্যাংগুয়েজ” বার্তা খচিত “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”(শহীদ মিনারের বৈশ্বিক সংস্করণ) এর প্রতিষ্ঠা সকল ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষাভাষীকে নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চায় উৎসাহিত করবে, সার্বজনীন আগ্রহ এবং উদ্যোগের সমন্বিত প্রয়াস ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষা সমূহকে ভয়াবহ অবক্ষয়তা থেকে মুক্ত করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।

মাতৃভাষা চর্চা/সংরক্ষনের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি বাংলা ভাষা আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মসূচীর পাশাপাশি বাংলা ভাষার উপর গবেষণা এবং বাংলা ভাষার প্রকাশনাসমূহ সংরক্ষণের জন্য বাংলা একাডেমী’র প্রতিষ্ঠার মৌলিক ধারণার উপর গবেষণা এবং অনুকরণের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপ্ত ঝুঁকিপূর্ণ মাতৃভাষা অবক্ষয়ের কমন কারন এবং ভাষাগুলি সংরক্ষণের কমন সুযোগ সুবিধার কথা বিশ্লেষণ করে, “লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার স্থাপনা” বৈশ্বিক দর্শন হিসেবে সংকলিত হয়েছে। প্রতিটি দেশের প্রতিটি লাইব্রেরিতে প্রতিষ্ঠিতব্য “একুশে কর্নার” একটি মিনি বাংলা একাডেমীর মত স্থানীয় পর্যায়ে “ভাষা কোষ” হিসেবে স্থানীয় সকল ভাষার বর্ণমালা ও সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সংগ্রহের ব্যাবস্থা নিশ্চিত করবে। “কন্সারভ ইউর মাদার ল্যাংগুয়েজ” বার্তা খচিত আকর্ষণীয় পোষ্টার সকল ভাষাভাষীকে নিজ নিজ মাতৃভাষা সংরক্ষণে উৎসাহিত করবে।

উপরোল্লিখিত দর্শনদ্বয় বাস্তবায়নের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল ঝুঁকি পূর্ণ মাতৃভাষা রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত এবং সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনা অপরিহার্য। ভাষা অবক্ষয়রোধের অতিবাস্তব এই প্রয়োজন মিটানোর জন্য প্রয়োজন সকল ইউএন সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক মাতৃভাষা সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট সাধারণ এবং সমন্বিত নীতিমালা গ্রহনইউনেস্কোর সাধারণ পরিষদে উপস্থাপনের নিমিত্তে এমএলসি মুভমেন্ট ইন্টারন্যাসন্যাল ইনক এই প্রয়োজনের অপরিহার্যতা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকল ভাষাভাষীর গ্রহণোপযোগী সাধারণ নীতিমালার রূপরেখা প্রণয়ন সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে।

 

পরবর্তী লেখাঃ

একুশের চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন

বাস্তবায়নের রূপরেখা-২

 

 

লেখক পরিচিতিঃ নির্মল পাল;

ইমেইলঃ nirmalpaul@optusnet.com.au

প্রতিষ্ঠাতা, এবং চেয়ারপারশনঃ                   এমএলসি মুভমেন্ট ইনটারন্যাশন্যাল ইনক

প্রাথমিক নকশা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নকারী দলনেতাঃ      পৃথিবীর প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”

প্রকাশিত গ্রন্থঃ                           “বিশ্বায়নে শহীদ মিনার”

বৈশ্বিক দর্শনঃ                            “লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার”,(স্থানীয় বর্ণমালা সংরক্ষণ কেন্দ্র)