গত রবিবার ৫ মে ,২০২৩ , সন্ধ্যা সাতটায় সিডনিতে অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টনের সভাপতিত্বে এবং অস্ট্রেলিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান শামীমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে টেলিফোনের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কাউন্সিলের নির্বাচিত কাউন্সিলর কাজি নুরুল আমিন মামুন, নাসিম সামাদ, এমদাদ হক, নির্মাল্য তালুকদার, রহমত উল্লাহ, মশিউর রহমান হৃদয়, এস এম বাবুল হাসান বাবু, জামির আহমেদ, অপু সারোয়ার, মহিউদ্দিন কাদের, প্রমুখ।
আলোচনা সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং তাঁদের আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বশীর আহমেদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এস এম কামাল হোসেন বলেন, পচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনী মোস্তাক, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও তাদের দোসররা রাতের আঁধারে নিষ্ঠুরভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে। সে সময়ে দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে, রাতের পর রাত কার্ফ্যু জারী করে ঘাতক জিয়া দেশে সামরিকতন্ত্র কায়েম করে। জাতির সেই দুর্দিনে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু কন্যা , আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তারপর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে মানুষের ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন। তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন। এস এম কামাল হোসেন তার বক্তৃতায় আরো বলেন, আজ বিদেশের নেতারাও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ব্যক্তিগত কারিশমা ও সফল কূটনীতির মাধ্যমে দিয়ে শেখ হাসিনা আজ নিজেকে বিশ্বনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
সভায় অন্য বক্তারা বলেন, রাজনীতিতে আদর্শ ও নেতার প্রতি আনুগত্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। পচাত্তরের ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতা সর্বশ্রদ্ধেয় সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, তাজউদ্দিন আহমেদ এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামান জীবন দিয়ে দেশ, দল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রমান করেছেন। পচাত্তরের পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে জেলখানায় হত্যার মূল উদ্দেশ্যই ছিল, যাতে আওয়ামী লীগ আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। বাংলাদেশের বুক থেকে যেন স্বাধীনতার চেতনা মুছে যায়। আজ প্রমাণিত হয়েছে, ঘাতকদের সেই লক্ষ্য ব্যর্থ হয়েছে। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। প্রবাসে অবস্থান করে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে স্ব স্ব অবস্থান থেকে আমরাও দেশের জন্য কাজ করে যাবো। আলোচনায় বক্তারা জাতীয় চার নেতার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে নানামুখি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসররা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নকে ব্যর্থ করে দেবার জন্য দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। জনবিচ্ছিন্ন এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে জনগণই প্রতিহত করবে। প্রবাসে থেকেও আগামী নির্বাচনে জয়লাভের জন্য সবাইকে যারযার অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।