নাইম আবদুল্লাহ, ঢাকা: বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত দেশ গঠনে প্রবাসী সাংবাদিক ও গণমাধ্যম বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। মহান স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিয্য লালন করে বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশী গণমাধ্যম কর্মীদের বিশেষ ভূমিকার কারণেই বাংলাদেশ আজ উন্নত ও মর্যাদাশীল দেশ হওয়ার রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠছে।
গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দুপুরে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিল যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরাম (বিজেআরএফ)-এর উপদেষ্টা ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া।
বিজেআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত বাংলাদেশ গঠনে প্রবাসী সাংবাদিক ওগণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার।
আরও বক্তব্য রাখেন, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মেদ আবদুল মতিন, নির্বাহী পরিষদের সদস্য আকিদুল ইসলাম ও নাইম আবদুল্লাহ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও সংবাদের বার্তা সম্পাদক কাজী রফিক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক, দ্যা গুডমর্নিং পত্রিকার সম্পাদক এনায়েত হোসেন খান, সাবেক এমপি এডভোকেট ইফাত আরা বেগম , ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবদুল বাতেন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গনি মিয়া বাবুল সহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরাম, রুরাল জার্নালিস্ট ফাউন্ডেশনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও টেলিভিশনের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রেস কাউন্সিলকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত বাংলাদেশ গঠনে প্রবাসী সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মেদ আবদুল মতিন বলেন, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসি বাংলাদেশীদের ৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ‘অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশগ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিল’ গঠিত হয়েছে যার মাধ্যমে প্রবাসে এবং দেশে উন্নত বিশ্বের ধারনা আদান-প্রদান করে স্বপ্নের বাংলাদেশকে আমরা উন্নত দেশে পরিনত করতে পারি।
তিনি তার প্রস্তাবনায় মত প্রকাশ করে বলেন, উন্নত দেশ গঠনে সাংবাদিকদেরকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। সাংবাদিকদেরকে কঠোর হতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন সততা।
তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি আবেদন জানিয়ে বলেন, সরকারী সফরে যাওয়া মন্ত্রী, এমপি ও আমলারা যেন সেদেশের বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হয়ে সফরের উদ্দেশ্য ও সফলতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং দেশে ফিরে এসে উন্নত বিশ্বের ধারনাগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহন করেন।
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আকিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষি খাত থেকে দেশের বাৎসরিক আয় ৭% অন্যদিকে প্রবাস থেকে রেমিটেন্স আসে ১০%। প্রবাসীরা যেন দেশে ভোটাধিকারের সুযোগ পায় সেই বিষয়ে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান”।
অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস এন্ড মিডিয়া কাউন্সিলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নাইম আবদুল্লাহ সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন পুনর্বিবেচনা সহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীরা যাতে চাকুরী থেকে অবসরের পর বাংলাদেশে থেকে প্রবাসের ভাতা পেতে পারে সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
অনুষ্ঠানে সম্প্রতি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত সমকালের সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুলের রূহের মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। মরহুম শিমুলের পরিবারকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া কাউন্সিলের পক্ষ থেকে এক লক্ষ টাকা সহায়তার প্রদানের অঙ্গীকার করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ প্রবাসী সাংবাদিক মোহাম্মেদ আব্দুল মতিন, আকিদুল ইসলাম ও নাইম আবদুল্লাহকে কাউন্সিলের মনোগ্রাম যুক্ত লাল-সবুজের পতাকা সম্বলিত উত্তরণ (স্কার্ফ) পড়িয়ে এবং ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা প্রদান করেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের পক্ষ থেকে বিশেষ রেস্ট প্রদান এবং অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।