আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। রবিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভূমি আইন ও ব্যবস্থা বিভাগের উদ্বোধন ও নবীনবরণ-২০১৭’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি বলেই মুখ খুলতে বাধ্য হচ্ছি।’
এসকে সিনহা আরও বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে এমনকি ভারত, পাকিস্তানের মতো দেশে নিম্ন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি ও বদলি, সবই করে থাকে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু বাংলাদেশে এটি দেখা যায় না। আমাদের সংবিধানে জুডিশিয়াল রিভিউর ক্ষমতা একমাত্র সুপ্রিম কোর্টকে দেওয়া হয়েছে। সংবিধান বলছে, কোনও আইন অন্য প্রচলিত আইনের পরিপন্থী হলে তা বেআইনি হয়ে যায়।’
জবি কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘আইন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর মধ্যে ভূমি আইন হচ্ছে আইনের মূল স্তম্ভ। কিন্তু ভূমি আইনের জটিল বিষয় সম্পর্কে অনেক আইনজীবীরই জানা নেই। এ দেশের বেশিরভাগ ভূমি আইন ব্রিটিশ শাসনামলে করা, যেগুলোর বেশ কয়েকটি ক্রটিপূর্ণ। তাই ভূমি আইন সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ প্রকৃত আইনের শাসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শ্রমিক ও কৃষকরা। তাই মাটি ও মানুষের পক্ষে আইন করতে হলে ভূমি আইন জরুরি।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কোনও দেশের প্রধান বিচারপতি এত কথা বলেন না মন্তব্য করেছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তাকে ইঙ্গিত করেই জবিতে ‘ভূমি আইন ও ব্যবস্থা বিভাগের উদ্বোধন ও নবীনবরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি কথাগুলো বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এ আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান খ্রিস্টিন রিচার্ডসনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরেক বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। (সূত্রঃ বাংলাট্রিবিউন )