সিডনীতে পালিত হল বসন্ত উৎসব ।

সিডনীতে পালিত হল বসন্ত উৎসব ।

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ “আহা আজি এ বসন্তে / এত ফুল ফোটে / এত বাঁশি বাজে / এত পাখি গায় / আহা আজি এ বসন্তে/”  – বসন্তের এই কিংবদন্তি গানের কিংবদন্তি রচয়িতা বিশ্বকবি শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথার্থই লিখেছেন। বসন্তের এই বন্দনা গাওয়ার জন্যই গত ৬ই মে শনিবার লাকেম্বার জুবলি রিজার্ভ পার্কে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল “বসন্ত উৎসব-১৪২৩”। অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে ‘বৈশাখ -১৪২৪’ এ ‘বসন্ত -১৪২৩’ কেন ? সহজভাবে বলা যায় – সঠিক সময়ে সঠিক ভেন্যু এবং দিনক্ষণ না মেলায় ৬ই মে কে বেছে নেয়া।

“ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক – বসন্ত হৃদয়ে আজ আমার” – এই অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছিল মেলায় আগত সকলের চোখে-মুখে।
বেলা ১০:৩০ মিনিটে বসন্তের বন্দনা গান  “ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগল যে দোল” – এর সাথে উৎসবের আয়োজক  “বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি অফ অস্ট্রেলিয়া ইন্‌ক” – এর কালচারাল সেক্রেটারি তামান্না রহমান তার সুপ্রতিষ্ঠিত “বাংলা মিউজিক অ্যান্ড ড্যান্স  একাডেমি” –র সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে মন্দিরার তালে তালে নেচে নেচে শোভাযাত্রার মাধ্যমে মঞ্চের সামনে থাকা দর্শক সারিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে চলে আসেন যা কিনা সবার নজর কাড়ে এবং সিডনীতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। পরবর্তী গানে তামান্না রহমান তার  শিক্ষার্থী, অতিথি এবং মাঠে উপস্থিত দর্শকদের সবার হাতে রঙের ছোঁয়া লাগিয়ে দেন। এসময় অতিথিদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন লাকেম্বার এম.পি জিহাদ দিব, সাবেক কাউন্সিলার মাইকেল হাওয়াত, প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে ফেডারেল নির্বাচনে লেবারেল পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী জনাব মোহাম্মাদ জামান টিটু , স্ট্রাথফিল্ড সিটি কাউন্সিলার রাজ দত্ত সহ আরও অনেকে। এরপর মঞ্চে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এবারের “বসন্ত উৎসব” শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়।
প্রথমেই “আনন্দলোকে মঙ্গললোকে” গানের সাথে  নৃত্য পরিবেশনের  মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করে তালহা, কুমকুম, শার্লি, সামিহা, আদ্রিতা ও প্রিসিলা। এই সাথে শুরু হয় বাংলা মিউজিক অ্যান্ড ড্যান্স  একাডেমি” –র পরিবেশনা। এ পর্বে রবি ঠাকুরের আবৃত্তি, নৃত্য ও সঙ্গীতের মাধ্যমে ঋতুরাজ বসন্তের রঙ, রূপ ও রসের বর্ণনা করা হয় ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার মাধ্যমে। প্রথম পর্বের সমাপ্তির পর “রঙধনু” থেকে রূপকথার নাচ এবং “লাকেম্বা বাংলা স্কুলের” ছোট্ট শিশুদের পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বটি সাজানো হয়েছিল বিদেশী শিল্পীদের পরিবেশনা দিয়ে। এতে চাইনিজ কমুঊনিটি থেকে “এম.সি.সি ড্যান্স গ্রুপের” নৃত্য পরিবেশনা উপস্থিত দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করে। এছাড়াও পাকিস্তানি কমুঊনিটির ছোট বাচ্চাদের পরিবেশনায় ও ইন্ডিয়ান কমুঊনিটি থেকে  রাজিয়া সুলতানার গানে উৎসবে ভিন্নমাত্রা যোগ হয়।
দ্বিতীয় পর্ব শেষ হলে আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরনের জন্য মঞ্চে আসেন ফেডারেল এম.পি টনি বার্ক, স্ট্রাথফিল্ড সিটি কাউন্সিলার রাজ দত্ত, বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি অফ অস্ট্রেলিয়া ইন্‌ক –এর উপদেষ্টা ড. আবদুল ওয়াহাব, কালচারাল সেক্রেটারি তামান্না রহমান এবং কানটারবুরি সিটি কমুঊনিটি সেন্টারের পক্ষ থেকে রুমানাএখানে প্রতিযোগিতায় শিশুদের সবাইকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।  উল্লেখ্য যে, টনি বার্ক এম.পির কাছ থেকে কানটারবুরি সিটি কমুঊনিটি সেন্টার প্রদত্ত কমুঊনিটি সার্ভিস এওয়ার্ড গ্রহন করেন বাংলা মিউজিক অ্যান্ড ড্যান্স  একাডেমির পরিচালক তামান্না রহমান, রংধনু থেকে কাজী জাকারিয়া আরিফ , এম.সি.সি ড্যান্স গ্রুপের ম্যাগি এবং লাকেম্বা বাংলা স্কুলের জুবাইদা।
পুরস্কার বিতরন শেষে আমন্ত্রিত অতিথি এবং দর্শকরা শিশুদের একটি মনোমুগ্ধকর ফ্যাশান শো উপভোগ করেন। ফ্যাশান শোতে অংশগ্রহণ করে তালহা, কুমকুম, শার্লি, সামিহা, আদ্রিতা, প্রিসিলা ও রোহিণী।
উৎসবের শেষ পর্বে ছিল আকর্ষণীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র ।
এখানে সংগীত পরিবেশন করেন রাসেল ইসলাম এবং ব্যান্ডের গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন নুর-ই মুহাম্মাদ সজীব। সময় স্বল্পতার কারণে দর্শক অনুরোধ থাকা  সত্ত্বেও সাংস্কৃতিক পর্বটি শেষ করতে হয়। সবশেষে র‍্যাফেল ড্র-এর বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করেন ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলার মাসুদ চৌধুরী , লেবার পার্টি লাকেম্বার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জামিল হোসেন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ সিডনীর সাধারন সম্পাদক গাঊসূল আলম শাহজাদা।
র‍্যাফেল ড্র-র পুরস্কার স্পন্সর করেন  ড. আবদুল ওয়াহাব। এত সুন্দর উপভোগ্য উৎসবটি আয়োজনের জন্য সত্যিই ধন্যবাদ পাওয়ার দাবি রাখেন “ বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি অফ অস্ট্রেলিয়া ইন্‌ক” –এর উপদেষ্টা ড. আবদুল ওয়াহাব , কালচারাল সেক্রেটারি তামান্না রহমান এবং মোঃ শাহ্‌রিয়ার রেজা আমিন; “সিডনি ফুড” , “খুশবু”  ও “পাঞ্ছবোল ম্যাকডোনাল্ড” যার সৌজন্যে এই “বসন্ত উৎসব” আরও সমৃদ্ধ ও সাফল্যমণ্ডিত হয়ে ওঠে এবং যার সার্বিক সহযোগিতায়  ছিল “কানটারবুরি সিটি কমুঊনিটি সেন্টার”।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন মুনা মুস্তাফা।
এছাড়াও যাদের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল তারা হলেন রংধনুর সহসভাপতি এম.এ ওহাব মিয়া  এবং সেক্রেটারি জেনারেল কাজী জাকারিয়া আরিফ, নুর-ই মুহাম্মাদ সজীব, রাসেল ইসলাম, কামরুল ইসলাম,  কল্লোল শর্মা, অন্তরা শর্মা, মোসাম্মৎ আক্তার, আসমাউল হুসনা, সুভ্রা সাহা প্রমুখ।