স্মৃতিময় দিনগুলো

স্মৃতিময় দিনগুলো

১.

প্রতি দিনের মত আজ ও জাপানে সুর্য উঠেছে । এলার্ম ঘড়ির আশ্রয় নিয়ে আমাদের ও ঘুম ভেঙ্গেছে সকাল সকাল। বেড টির মত বেড পেপারেই জানান দিয়েছিল বাংলাদেশের জাকজঁমকপূর্ণ বিজয় দিবসের উৎসবের কথা । ছেলের স্কুলে যাবার প্রস্তুতি, আমার অফিসে যাবার তাড়াও ছিল অন্যান্য দিনের মত। সব কিছুই নিয়ম মেনেই শেষ হয়েছে । ১০টার দিকে অফিসের ব্রেক আওয়ারে ভাতিজার ফেসবুকের ওয়ালে দেখলাম তরতাজা ফুলে ঢেকে যাওয়া স্মৃতিসৌধের পাদদেশের ছবি। বন্ধু ওর মেয়ের হাতে ঝান্ডাসহ বাংলাদেশের পতাকার ছবি পোষ্ট করেছে । ক্যাপশনে লিখেছে ” মায়ের হাতে দেশমাতার পতাকা । জয় বাংলা !” অফিস থেকে ফিরে বিষন্নমনে ওয়ার্ল্ড ক্লাব কাপের খেলা দেখতে দেখতে সোফায় ঘুমিয়ে পরে স্বপ্ন দেখছিলাম ভার্সিটির সময়টার। কার্জন হলের মেইন গেট পেরিয়ে দোয়েল চত্তরের দিকে হাটছি আমরা কয়েকজন। লাইব্রেরির ডানদিকের রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ স্ক্রীনে দেখানো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ডকুমেন্টারী। দুর থেকে ভেসে আসছে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন। সোহরাওয়ার্দীউদ্যানের পাশের রাস্তা দিয়ে হাঠছি আমরা । উপচে পরা মানুষের ভীড় । এরকম দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত নয় এমন যে কেউ বলে ফেলবে ” বিজয় কি আজই হল ? ” । বাংলা একাডেমী আজ নতুন সাজে সেজেছে। ফেব্রুয়ারীর সাজের চেয়ে একটু আলাদা । গেটের দুই পাশে বইয়ের দোকানের জায়গাগুলো আজ ফুসকা , চটপটি ও খেলনার দোকানদাররা দখল করে নিয়েছে। গরম গরম চটপটির ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে আশপাশ। জিভে পানি আসলেও বন্ধুরা সায় না দেয়ায় চটপটির টেস্ট নেয়া হল না। চারদিকে বাঁশি, ডুগডুগির শব্দ এতই যে বন্ধুদের কথোপকথন কানেই ঢুকছিল না। ডাসের সামনের স্টেজ থেকে আবৃত্তির আওয়াজ আসছিল একটু পর পর। ” কারার ঐ লৌহ কপাট … ” কানে আসতেই শরীরে একটু শিহরণ অনুভব করলাম। চোখ খুলে দেখি ছেলে শরীর নাড়া দিয়ে জাগানোর চেষ্ঠা করছে। পুরো গানটা আর শোনা হল না।

২.

আজ থেকে ২০-২২ বছর আগের কথা। আমাদের ব্যাচের কয়েকজনের অক্লান্ত পরিশ্রমে সার্ক স্টাডি ট্যুরটা সফল হয়েছিল। রুমানার নামটা অবশ্য সবার আগে চলে আসে। কয়েকদিন আগে অফিসের বার্ষিক ভ্রমণে গিয়ে ভার্সিটি জীবনের সেই ট্যুরের স্মৃতিটা ঘুরপাক খাচ্ছিল বারবার। ফেসবুকে বন্ধুদের সেই ট্যুরের ছবির আপলোডে মাঝে মাঝে হারিয়ে যেতাম সেইসব দিনগুলোত। এবারের অফিসের ট্যুরের কারনে মনটাও ফিল করছিল সেইসব দিনগুলোকে। সেটা ৯৪’র দিকের কথা। অনার্স শেষে মাস্টার্সের শুরুর প্রথম দিকে। আমাদের গ্রুপের একদল বিসিএস এর প্রস্তুতির কারনে যাবে না ঠিক করল, আমরা যাবার পুর্ব প্রস্তুতি হিসাবে পাসপোর্ট বানানোর জন্য কাগজপত্র জমা দিলাম। কোন ঘুষ না দিয়েই যথাসময়ে পাসপোর্ট হাতে এল। কোন ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই স্টাডি ট্যুরটা বাস্তবে রুপ নিতে চলল।

মেইল ট্রেনগুলোতে ছাড়পোকার কামড় খেতে খেতে ট্রেন ভ্রমনের অভিজ্ঞতা কিংবা গাইবান্ধা – ঢাকা নাইটকোচের মফিজ মার্কা বাসে বিভিন্ন ধরনের গন্ধ নিতে নিতে বাস ভ্রমনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজনকে বলা হল ” আগামীকাল উড়োজাহাজে ভ্রমন । তাও আবার অন্য দেশে “। তার অবস্থা যেমন হত আমার অবস্থাও ঠিক তেমনি ছিল। কিন্তু বহিঃপ্রকাশ হতে দেয়নি, হাজার হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র! আমাদের গ্রামের দালালদের হাত ধরে যারা বিদেশে যেতে সক্ষম হত, তাদেরকে সি অফ মানে বিদায় দেবার জন্য দশ বারজনের একটা বহরকে এয়ারপোর্ট আসতে দেখতাম । আমার বেলায় তেমন কিছু ঘটেনি, শহীদুল্লাহ হল থেকে নয় নম্বর বাসে সরাসরি এয়ারপোর্টে । ঢাকার বন্ধুদের মা বাবারা অবশ্য এসেছিলেন এয়ারপোর্টে । আমার ক্ষেত্রে বিদায় বলতে আগের দিন সন্ধ্যায় প্রেমিকাকে লেডিস হলের সামনে বিদায় জানানো ( আমার সাথে অবশ্য আর একজনকে বিদায় নিতে দেখেছিলাম ওর প্রেমিকার কাছ থেকে)। হাজার হলেও আকাশ পথের ভ্রমন। ধ্বপাস করে পড়লেই টপ করে উড়ে যাবে প্রান পাখিটা । বাড়ি থেকে বিদায় না নিতে পারায় মনটা খচখচ করছিল । নেবই বা কিভাবে ? তখন তো আর এখনকার মত মোবাইল ফোন ছিল না। ঝামেলা ছাড়াই ইমিগ্রেশন শেষ করে প্লেনে উঠে পড়লাম। ঢাকা কলকাতা ফ্লাইট । ফ্লাইট টাইম ৩০ মিনিট । কোন এয়ারওয়েজ ছিল মনে নাই । সম্ভবত ‘বিমান বাংলাদেশ’ ছিল। এখন টিকিট বুকিংয়ের সময় থেকেই জেনে যাই কোন এয়ারলাইনস এ যাচ্ছি। কেননা হাজারো ক্যালকুলেশন করতে হয় ভাড়াটার। থাই নাকি মালেশিয়া নাকি চায়না সাউদার্ন । যেটাতে কম সেটাতে বুকিং। সার্ভিস কেমন, কতক্ষন লাগবে সেগুলো পরে, আগে দেখি ভাড়া কোনটাতে কম। সেই সময়ে প্লেনে উঠতে পারাটাই স্বপ্ন। ভাগ্যক্রমে জানালার পাশেই সিটটা ছিল। জানালার পাশের সিটের সেই স্মৃতিটাকে ভুলতে পারি না এখনো। তাইতো প্রতিবার চেক-ইন করতে গেলে লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বলেই ফেলি ” আইল না উইন্ডো “!

৩. ঝগড়া

এক ঝাক তরুন তরুনীর স্টাডি ট্যুর, ঝগড়া, ঝামেলা হওয়াটাই স্বাভাবিক । উল্লেখযোগ্য তেমন কিছুই ঘটে নাই, যেটা কিনা ইতিহাসে স্হান করে নেবে। তার পরেও মনোমালিন্য, ভালো লাগা না লাগা ব্যপারগুলো তো ছিলই। বয়সটাই ছিল নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি দুর্বার আকর্ষনের। লাল পানিকে চেখে দেখার ইচ্ছে কয়েকজনের ছিল প্রবল। আমাদের মত নীরিহদের(?) অবস্হান ছিল পুরা বিপরীতে। কেউ তো আমাদেরকে ঐ দলটাকে রোখার অধিকার দেয় নাই। তবে পানির ডোজের কারনেই হোক কিংবা লোক দেখানোর মাতলামিটা আমাদের বিশেষ করে আমার ভাল লাগত না। আর তাই নেশায় বুদ হয়ে মাতলামি শুরু করলে প্রায়ই ঝগড়া লেগে যেত দীপকের সাথে। হাতাহাতির পর্যায়ে যাবার আগেই তারিক কিংবা বিলুভাইয়ের মধ্যস্থতায় থামাতে হত ঝগড়া । ট্যুর শেষে দেশে ফিরে দীপক অবশ্য ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তালিকায় নামটা লিখে ফেলেছিল। তাইতো দেশে গেলে দেখা করার চেষ্টা করি, ফোনেও কথা হয় মাঝে মাঝে। কিন্তু কেন যেন লিজেকে অপরাধী মনে হয় সেই সময়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য। দুঃখ প্রকাশ করার সুযোগ পাইনি বা সাহস হয়নি।

এখন একটু জাপানী টেকনিক ব্যবহার করব। জাপানীরা নিজের ভুলের কারনে ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায় কাউকে কষ্ঠ দিলে, টিভি প্রোগাম, কিংবা নিজের ইন্টারভিউ এর সময় মাফ চেয়ে নেয়। ওদের ভাষায় ” কোনো বা ও কারিতে ( আমি এই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই) ক্ষমা চাওয়ার জন্য ” । আমিও সরাসরি মাফ না চেয়ে তারিকের ব্লগকে ব্যবহার করলাম সরি বলার জন্য। ঐ শ্যালা তো পড়বেই না, তারপরেও ” সরি দীপক । আমার রক্ত এখন টগবগে নয়। আমি ট্যুরে তোর সাথ রাগ না দেখালেও পারতাম ” অনেকের চঞ্চলতা কেন জানি চেখে বেশী পরত সেই সময় । আজ যখন ভার্সিটি পড়ুয়া ভাস্তে ভাতিজীদের একই চঞলতা দেখি তখন মনে হয়, কমই দেখিয়েছে সবাই দুরন্তপনা বড়ং আমিই আতেল ছিলাম বেশী।

এখন যখন অনেকেই ভ্রমনের ছবি পোষ্ট করে ৯৪ এর সেই সময়গুলোকে চোখের সামনে দেখতে পাই স্পষ্টভাবে। হোটেলের রুম বন্ঠন নিয়ে মনে হয় বেয়াদবি করেছিলাম স্যারের সাথে। স্যার প্রতিশোধ নিয়েছিলেন সুক্ষভাবে। মাস্টার্সের মার্কসিট দেখেই টের পেয়েছিলাম স্যারের প্রতিশোধর ধরনটাকে। ভুক্তভোগী শুধু আমিই ছিলাম না অনেকেই সেই কাতারে ছিল। ভাগ্যিস ফেল করান নাই ভাইবায়। ফেল করালেই লাইফটাই অন্যরকম হয়ে যেত। আমি বেয়াদবি করেছিলাম স্যার প্রতিশোধ নিয়েছেন সমান সমান। এটা আমার মনকে সান্তনা দেবার টেকনিক। আসলে ভাইবাতেই খারাপ করেছিলাম বলেই স্যার ঐ রকম মার্কিং করেছেন।

৪. লজ্জা

স্টাডিট্যুরটা প্রায় এক মাসের মত ছিল।  শেষের দিকের হোম সিকনেসকে বাদ দিয়ে পুরা ট্যুরটাই ছিল জীবন্ত। সারাদিন ঘুড়াঘুড়ি,মাঝে মাঝে সপিং এবং সারাদিনের ক্লান্তি দুর করতে ঘুম। প্রায় প্রতি দিনই একই সিডিউল। স্টাডি ট্যুরে আবার জ্ঞান আহরনের উপাদান থাকবে না তা কি করে হয়। না সেটাও হয়েছে IIT গুলোতে ঘুড়তে যেয়ে। গরীব দেশের বাসিন্দা হলেও আমাদের ট্যুরটাতে গরীবির কোন ছাপ পরতে দেখিনি। ৫ স্টার হোটেলে না থাকলেও যে সমস্ত হোটেল ছিলাম সেগুলো খারাপ ছিল না। একটা হোটেলের বর্ননা দিতেই হবে এখানে। হোটেলটার নাম তো মনে নাই এমনকি জায়গাটার নাম ও ভুলে গেছি। ওটি ও কন্যাকুমারির মাঝে। সম্ভবত কেরালার একটা সি বিচ রিজোর্ট। রুম থেকেই সমুদ্রের গর্জন, নারিকেল গাছে পরিপুর্ন পরো হোটেল চত্তর । নারিকেল গাছগুলোকে খাম্বা বানিয়ে ঝোলানো হয়েছে নেটের দোলনা ( দোলনার নাম তখনো জানি নাই এখনো জানি না) । ইংরেজি কিংবা হিন্দি ছবির নায়ক নায়িকাদের  ঐ সমস্ত দোলনায় শুয়ে ডাব কিংবা ড্রিংক্স খেতে দেখেছি। বাংলা সিনেমায় দেখিনী , পরিচালকরা মনে হয় নায়িকাদের শরীরের ওজনটাকে ভয় পেতেন । ভাল কিছু দেখাতে যেয়ে পুরো  সেটটাকে না আবার প্যাক অ্যাপ করা লাগে সেই ভয়ে । দোলনা দেখে স্যাডো নায়ক হবার ইচ্ছে হয়েছিল। প্রথম টেস্ট ট্রাই শহীদুল দেখালো । জেমস বন্ডের পরিচালক দেখলে পরবর্তী ছবির জন্য ওকে নিয়ে ফেলত । এবার আজাদের পালা, হলিউড ওর ভাগ্যে জুটল না। মাদ্রাজী ফিল্ম হলে চলতো আরকি!  আমি বুক ফুলে হেটে হেটে যেই না উঠেছি একটু পরেই আমার অবস্থান দেখি ভুমিতে। শহীদুল আর আজাদের গগনবিদারী অট্টহাসি সমুদ্রের গর্জনকেও হার মানালো। হলিউড বলিউড তো দুরের কথা লজ্জায় আমার মাথা আর উঠছিল না।

আগেই বলেছি গরীবি ট্যুর ছিল না আমাদের । প্রতি দিন ভোরেই আমাদের মজুরি মানে সেই দিনের হাত খরচ দিয়ে দেয়া হত। অ্যমাউনটা আমাদের জন্য বেশ হেলদি ছিল । পেট পুরে খাওয়া দাওয়া করেও পকেটে কিছু কয়েন জমতো। বেচে যাওয়া টাকা দিয়ে সপ্তাহ শেষে শপিং করতাম কিন্তু স্যারদের বুঝতে দিতাম না। কেননা allowance যদি কমিয়ে দেয়। এখন সেই সব দিনের কিপটামির কথা মনে হলে সত্যিই হাসি আসে।

ল্যাক্সারী ট্যুর ছিল তাই চুন থেকে পান খসলে মনে কষ্ট পেতাম । হোটেল বুকিং স্যার আগেই করে রাখতেন। অনেক সময় মিস হত। একবার হয়েছিল সে রকম। মাদ্রাজ থেকে সারা রাত জার্নি কর ব্যাঙ্গালুরু পৌছেছি আমরা। একরাস ক্লান্তি সবার চোখেমুখে, কিন্তু সবাইকে এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল স্টেশনে । মনে হয়েছিল হেটেই বাড়ির দিকে রওনা হই। আজ মনে হয় আর এক ঘন্টা অপেক্ষা  করলে ধর্য্যের পরীক্ষায় পাশ করতে পারতাম।

কলকাতা থেকে মাদ্রাজ হয়ে বাঙ্গালুর পর্যন্ত ভ্রমন  ছিল ট্রেনে। বাঙ্গালুর থেকে একটা মিনিবাস ভাড়া ছিল পরবর্তী সময়ের ভ্রমনের জন্য। তাই স্টেশনে অপেক্ষা আর করতে হয়নি কন্যাকুমারি পর্যন্ত যেতে। বাঙ্গালুর থেকে ওটি পর্যন্ত বাস জার্নিটা ঝাপসা মনে আছে। রুটটা ছিল পাহাড়ী। রাস্তার ডিভলপমেন্ট ততটা হয়নি সেই সময়টাতে । সর্পিল আকৃতির না বলে মিস্ট্রি সার্কেল বললেই রাস্তার তুলনা পারফেক্ট হবে। পাহাড় টাকে সেন্টার করে ঘুড়েই চলছে পাহাড়ের চতুর্দিকে । সরন X কিংবা Y ডাইরেকশনে হচ্ছে না, মনে হচ্চে আমরা  Z ডাইরেকশনে মানে আকাশের দিক যাচ্ছি। রাস্তাগুলোতে রেলিং নাই। জানালে দিয়ে তাকলেই গিরিখাদ ছাড়া কিছুই দেখা যায় না। যদি গাড়ীটা পরে যায় তবে পতনের শব্দ শুনার জন্য একদিন অপেক্ষা করতে হবে।  যাত্রীদের কি হাল হবে সেটার বর্ননা নাইবা লিখলাম । ভয় পেলেও প্রকাশ করি নাই ।

মবিন মনে হয় সিট ছেড় গাড়ীর মেঝেতে বসে পড়েছিল । জালানার পাশের বসা অনেকেই আসন চেন্জ করল। ড্রাইবার বাদে প্রায় সবাই বাইরের দৃশ্য দেখার চেয়ে গাড়ীর পাটাতনের শিল্পকর্ম দেখতে লাগল। ড্রাইভার  সাউথ ইন্ডিয়ান ছিল। গাড়ীতে তখন কারিশমা কাপুরের হিট গান ” হাই সেক্সী হ্যালো সেক্সী ….” ফুল ভলিয়মে বাজছে। ড্রাইভার সাহেব ওনার  steering  খানাকে তবলা বানিয়ে বেজেই চলেছেন। আমার  মনে হচ্ছিল ক্যাসেট প্লেয়ারে আয়তাল কুরছি বাজালেই ভাল হত। মৃত্যুর আগে আল্লা খোদার নাম নিয়ে মরতে পারতাম। মনমরা ভাবটাকে কাটানোর জন্য ক্যাসেটের সাথে গুনগুন করছিলাম। এক সময় মুখ ফসকে  ” হাই সেক্সী হ্যালো সেক্সী ….”  বেরিয়ে গেল। সমস্ত গাড়ীতে একটা  হাসির রোল পড়ে গেল। মবিন বলেছিল ” মাহবুব জোস! ” । আর কে কি বলেছিল সেটা আর কানে ঢোকে নাই  কেননা কান দিয়ে তখন গরম বাতাস বেরুচ্ছিল, আর চোখ সেটাতো তখন গাড়ীর পাটাতনে আমার লজ্জাটাকে তন্ন তন্ন করে খুজছিল…

Mahbub

 

 

 

 

(মোঃ মাহবুবর রহমান  তোত্তরি, জাপান, ,লেখক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার)